সাপ্তাহিক সমস্যা-০৫: সংখ্যাভাবুক সৌভিক বিকালে বাসায় বসে টিভিতে ক্রিকেট খেলা দেখছে। ইংল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর মধ্যকার খেলা চলছে। খেলাতে ক্রিস গেইল ৫ ওভারের একটি ম্যাচে একাই পুরো ম্যাচ ব্যাটিং করেছে। অন্য কোনো ব্যাটসম্যানকে কোনো বল খেলার সুযোগ দেন নি। ৫ ওভারের ম্যাচে চার মেরেছে ৫ বার এবং ছয় মেরেছে ১০বার! আবার, গেইল খেলা শেষে নট আউট ছিল। খেলাটিতে দৌড়িয়ে এক কিংবা দুই বা তিন রান প্রান্ত বদল করে নেওয়া সম্ভব। আর চার এবং ছয় রান তো আছেই। খেলাটিতে কোনো অতিরিক্ত রান ছিল না।সৌভিক হিসেব করে দেখলো গেইল যত রান করেছে সেটি একটি মৌলিক সংখ্যা! প্রশ্ন হলো, ক্রিকেট ম্যাচটিতে গেইল সম্ভাব্য কত রান করেছিলো এবং দৌড়িয়ে কতবার সে দুই রান নিয়েছিলো?
Problem Weekly-05: Number-lover Souvik is sitting at home in the afternoon watching the cricket match on TV. The cricket match is between England and West Indies. Chris Gayle batted the entire half alone in a match of 5 overs in the game. He did not give any other batsman a chance to play any ball. He hit fours 5 times and sixes 10 times in 5 overs. And he was not out at the end of the game. It is possible to make one or two or three runs by changing the end of the pitch through running in the game. There are also four and six runs. There were no extra runs in the game. Souvik calculated that the number of runs Gayle scored was a prime number! The question is how many runs did Gayle score in a cricket match and how many times did he take two runs by running?
সমাধান: গেইল যেহেতু অন্য ব্যাটসম্যানকে কোন বল খেলার সুযোগ দেয় নি এবং খেলা শেষে নট আউট ছিল; তার মানে গেইল একাই 30টি বল খেলেছে এবং পুরো খেলায় কেউ তাকে আউট করতে পারেনি।
খেলায় গেইল চার মেরেছে 5 বার এবং ছয় মেরেছে 10 বার। অর্থাৎ, 15 বলে সে মোট রান করেছে = (4 × 5) + (6× 10) = 80 রান
বাকি থাকলো 15 বল। এই 15 বলে অবশ্যই তাকে 0, 1, 2, 3 এই রানগুলো করতে হয়েছে। আবার, প্রথম 4 ওভারের ক্ষেত্রে প্রতি ওভারের শেষ বলে অবশ্যই গেইলকে বিজোড় সংখ্যক রান দৌড়িয়ে নিতে হবে, যাতে করে সে পরবর্তী ওভারের শুরু থেকেই ব্যাটিং করার সুযোগ পায়। ওভারের মাঝখানে এবং পঞ্চম ওভারের শেষ বলে গেইল চাইলে শুন্য রান কিংবা দৌড়িয়ে দুই রান নিতে পারবে।
এখন, গেইল যদি প্রথম চার ওভারের ক্ষেত্রে শেষ বলে বিজোড় সংখ্যক রান নেয় এবং পঞ্চম ওভারের শেষ বলে জোড় সংখ্যক রান নেয়, তাহলে কোনভাবেই গেইলের মোট রান বিজোড় সংখ্যা কিংবা মৌলিক সংখ্যা হতে পারবে না! (এই দাবি কি যৌক্তিক? পাঠকের কাছে প্রশ্ন থাকলো!) তাহলে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি যে, গেইলকে অবশ্যই পঞ্চম ওভারের শেষ বলে বিজোড় সংখ্যক রান নিতে হবে।
আচ্ছা, এখন গেইল এই ম্যাচে সর্বনিম্ন যে রান করতে পারে সেটা হলো- 85 রান ( চার রান- 5 বার, ছয় রান- 10 বার, এক রান- 5 বার , শুন্য রান বা ডট বল- 10 বার)।
গেইল এই ম্যাচে সর্বোচ্চ যে রান করতে পারে সেটা হলো- 115 রান ( চার রান- 5 বার, ছয় রান- 10 বার, তিন রান- 5 বার, দুই রান- ১০ বার)।
এই খেলায় গেইলের রান একটি মৌলিক সংখ্যা হবে। 85 এবং 115 এর মাঝে মোট মৌলিক সংখ্যা আছে 7 টি: 89 , 97, 101, 103 , 107, 109, 113
এখানের কোন কোন রান সম্ভব আমরা সেটা হিসেব করে দেখি-
89
0 run = 8 times
1 run = 5 times
2 run = 2 times
3 run = 0 times
4 run = 5 times
6 run = 10 times
97
0 run = 4 times
1 run = 5 times
2 run = 6 times
3 run = 0 times
4 run = 5 times
6 run = 10 times
101
0 run = 2 times
1 run = 5 times
2 run = 8 times
3 run = 0 times
4 run = 5 times
6 run = 10 times
103
0 run = 1 times
1 run = 5 times
2 run = 9 times
3 run = 0 times
4 run = 5 times
6 run = 10 times
107
0 run = 0 times
1 run = 4 times
2 run = 10 times
3 run = 1 times
4 run = 5 times
6 run = 10 times
109
0 run = 0 times
1 run = 3 times
2 run = 10 times
3 run = 2 times
4 run = 5 times
6 run = 10 times
113
0 run = 0 times
1 run = 1 times
2 run = 10 times
3 run = 4 times
4 run = 5 times
6 run = 10 times
আমরা দেখছি, সবগুলো রানই হিসেব অনুযায়ী সম্ভব! আবার, একটু খেয়াল করলে আমরা বুঝতে পারবো যে, একই রান চাইলে ভিন্ন ভিন্ন উপায়েও করা সম্ভব ছিলো। যেমন:
101
0 run = 2 times
1 run = 5 times
2 run = 8 times
3 run = 0 times
4 run = 5 times
6 run = 10 times
101
0 run = 7 times
1 run = 0 times
2 run = 3 times
3 run = 5 times
4 run = 5 times
6 run = 10 times
উপরের ছক থেকে সহজেই বুঝা যাচ্ছে গেইলের সম্ভাব্য রান কত ছিলো এবং সে মোট কতবার দৌড়িয়ে 2 রান নিয়েছিলো।
অনেকেই আমাদের কাছে এই সমস্যাটির সমাধান পাঠিয়েছেন। তবে, সম্পূর্ণ সমাধান কেউ করতে পারেন নি। বেশিরভাগ সমাধানে আংশিক উত্তর এসেছে (যেমন: 107 কিংবা 113 রান)। এজন্য, সাপ্তাহিক সমস্যা-০৫ এ কাউকে বিজয়ী ঘোষণা করা হচ্ছে না!
সাপ্তাহিক সমস্যা-০৪: আমাদের সবার পরিচিত “জ্যামিতিক জামি” আর “সংখ্যাভাবুক সৌমিক” একদিন তাদের কলেজ ক্যান্টিনে বসে গল্প করছে। ওদের কলেজের ক্যান্টিন বেশ আধুনিক। ক্যান্টিনে মোটামুটি সব ধরণের ফার্স্টফুড খাবার এবং কোল্ড ড্রিংক্স পাওয়া যায়। 250 মিলি. এর কাঁচের বোতলের কোল্ড ড্রিংক্স পাওয়া যায় এখানে যেগুলো বাইরে সাধারণত পাওয়া যায় না। কাঁচের বোতলের কোল্ড ড্রিংক্স এর দাম 15 টাকা। কিন্তু অনেক শিক্ষার্থী এটি কিনে ক্যান্টিনের যেখানে সেখানে ফেলে রাখে। এজন্য ক্যান্টিনে নিয়ম করা হয়েছে যে, কোল্ড ড্রিংক্স এর বোতল কিনতে হলে প্রথমে 20 টাকা দিতে হবে, যদিও প্রকৃত দাম কিন্তু 15 টাকা। এবং খাওয়া শেষ করে বোতল জমা দিলে 5 টাকা ফেরত দেয়া হবে!
Problem Weekly-04: One day our famous duo, “Geo-centric Jami” and “Number-lover Soumik”, are sitting in their college canteen and having chitchat as usual. Their college canteen is a furnished one. Almost all kinds of fast food and cold drinks are available in the canteen. 250ml glass bottles of cold beverages are mainly available here which are not usually available outside. Each of the glass bottles costs Tk15. But many people buy glass bottles and, leave them wherever in the canteen. So, a rule has been set in the canteen: to buy a glass bottle of cold drinks, one has to pay 20tk first, although the actual price is 15tk. And, if anyone finishes drinking and, returns the bottle unharmed, they will pay back 5tk.
Jami, however, has thought of giving his classmates a 7UP treat today. Jami has a total of 2025tk in his wallet. He is talking with Souvik about this matter- Jami: I have 2025tk in my wallet. If I spend 15tk for everyone, I can give 135 people a 7UP treat today. Souvik: Not really! You can’t buy 135 bottles at first. Initially, you can buy at most 101 bottles. Jami: Is that so? Then tell me, how many people can I give a 7up treat to within 2025tk? Souvik: I know but I will not reveal. Find it by yourself!
Well, can you tell us the highest number of people Jami gives treats to?
সমাধান: প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, জামির কাছে প্রথমে ছিল 2025 টাকা।
যেহেতু একটি 7up কিনতে 20 টাকা লাগে, তাই 2025 টাকা দিয়ে জামি প্রথমবার মোট 7up কিনতে পারবে = (2025 ÷ 20 ) = 101 টি এবং অবশিষ্ট থাকবে 5 টাকা।
কিন্তু ক্যান্টিনের নিয়মানুসারে, প্রতিটি খালি বোতল জমা দিলে 5 টাকা ফেরত পাওয়া যায়।
তাহলে, 101 টি 7up এর খালি বোতল জমা দিলে জামি ফেরত পাবে = (101 × 5) = 505 টাকা।
তাহলে, আগের 5 টাকা সহ জামির কাছে বর্তমানে আছে = (505+5) বা 510 টাকা।
এবার, 510 টাকা দিয়ে জামি মোট 7up কিনতে পারবে = (510 ÷ 20 ) = 25 টি এবং অবশিষ্ট থাকবে 10 টাকা।
একইভাবে, এই 25 টি 7up এর খালি বোতল জমা দিলে জামি ফেরত পাবে = (25 × 5) = 125 টাকা।
তাহলে, এখন জামির কাছে আছে (125+10) বা 135 টাকা।
একই নিয়মে, 135 টাকায় মোট 7up কেনা যাবে = (135 ÷ 20 ) = 6 টি এবং অবশিষ্ট থাকবে 15 টাকা।
আবার, 6 টি 7up এর বোতল জমা দিলে ফেরত পাওয়া যাবে 30 টাকা। তাহলে, জামির কাছে এখন থাকবে (30+15) বা 45 টাকা।
একইভাবে, 45 টাকায় 7up কেনা যাবে 2 টি এবং অবশিষ্ট থাকবে 5 টাকা।
নিয়মানুসারে, 2 টি 7up এর বোতল জমা দিলে ফেরত পাওয়া যাবে 10 টাকা
তাহলে, জামির কাছে এখন আছে (10+5) বা 15 টাকা।
20 টাকার কমে যেহেতু 7up কেনা যায় না, কাজেই জামি অবশিষ্ট টাকা দিয়ে নতুন করে 7up কিনতে পারবে না।
তাহলে, জামি মোট 7up কিনতে পেরেছে = (101 + 25 + 6 + 2) = 134 টি
সুতরাং, জামি মোট 134 জনকে ট্রিট দিতে পেরেছিলো।
অনেকেই আমাদের কাছে এই সুন্দর সমস্যাটির সমাধান পাঠিয়েছেন। আমরা মোট ১২ জনের সঠিক উত্তর পেয়েছি। তারা হলেন-
সাপ্তাহিক সমস্যা-০৩: চট্টগ্রামের ছেলে তৌফিক তার বন্ধুদের মেজবান অনুষ্ঠানের দাওয়াত দিয়েছে। তবে শর্ত দিয়েছে যে, অনুষ্ঠানের দিন শুধুমাত্র লাল, সবুজ, সাদা কিংবা কালো- এই চার রঙের মধ্য যে কোন এক রঙের পোশাক পরিধান করে উপস্থিত থাকতে হবে। অনুষ্ঠানের দিন তৌফিকের বন্ধুদের মধ্যে আমাদের সবার পরিচিত সংখ্যাভাবুক সৌভিকও ছিল। সৌভিক অনুষ্ঠানে এতো মানুষজন দেখে অবাক! সে ঘুরে ঘুরে কতজন মানুষ এসেছে সেটি গণনা করা শুরু করে দিল। একসময় তৌফিকের সাথে সৌভিকের সাথে দেখা হয়। তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে শুরু করে- তৌফিক: দেখছিস কতো মানুষ এসেছে! সৌভিক: হ্যাঁ। আমি গুনে দেখলাম অনেক মানুষ এসেছে। তবে, যতজন এসেছে তাদের মধ্যে ছয় ভাগের এক ভাগ মানুষ লাল পোশাক পরে এসেছে। ১৩৮ জন কালো রঙের পোশাক পরে এসেছে। আবার, যত জন মানুষ সাদা রঙের জামা পরেছে, তারচেয়ে তিন গুণ মানুষ সবুজ রঙের জামা পরেছে। আর, মোট উপস্থিত মানুষের চার ভাগের এক ভাগ মানুষ সাদা কিংবা কালো রঙের পোশাক পরেছে। তৌফিক: তাই নাকি! আমি তাহলে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে তোমার এই ধাঁধাঁর সমাধান করার চেষ্টা করবো। আজকে কিন্তু সমাধান না করে বাসায় যাচ্ছি না!
আচ্ছা, তোমরা কি বলতে পারবে “মেজবান” অনুষ্ঠানে মোট কতজন মানুষ এসেছিল?
Problem Weekly-03: Taufiq, a son of Chittagong, has invited his friends to the “Mezban” ceremony. However, a dress code has been set for the attendee: only red, green, white, or black; these four colors are the options to wear for the ceremony. Among Taufiq’s friends, on the event day, Number-lover Souvik was also present. He was surprised to see so many people there. He turned around and started counting how many people had come to the program. At one point, Taufiq meets Souvik. They started to talk- Taufiq: You see how many people have come! Souvik: I saw a lot of people coming. However, one-sixth of those who came were wearing red clothes. 138 people came dressed in black. Three times as many people were wearing green clothes than those who wear white clothes. And one-fourth of the people present are wearing white or black clothes. Taufiq: Is that so?! I’ll try to solve it after having the meal. And, of course, I’ll not leave this place until I solve your riddle!
Well, can you tell me how many people came to the “Mezban” ceremony in total?
সমাধান: আমরা প্রথমে ধরি যে, মেজবান অনুষ্ঠানে মোট মানুষ এসেছে x জন
তাহলে লাল পোশাক পরেছে এমন মানুষের সংখ্যা হবে x/6 জন
আর কালো পোশাক পরেছে এমন মানুষের সংখ্যা হলো 138 জন
আবার, বলা আছে মোট মানুষের চার ভাগের এক ভাগ মানুষ হয় কালো কিংবা সাদা রঙের পোশাক পরেছে।
তাহলে, সাদা রঙের পোশাক পরেছে এমন মানুষের সংখ্যা + কালো রঙের পোশাক পরেছে এমন মানুষের সংখ্যা = x/4
তাহলে সাদা রঙের পোশাক পরেছে এমন মানুষের সংখ্যা = (x/4 – 138)
আবার, সবুজ রঙের পোশাক পরেছে এমন মানুষের সংখ্যা, সাদা রঙের পোশাক পরা মানুষের তিন গুণ।
অর্থাৎ, সবুজ রঙের পোশাক পরেছে এমন মানুষের সংখ্যা = 3 × (x/4 – 138)
তাহলে আমরা বলতে পারি,
x/6 + 138 + (x/4 – 138) + [ 3 × (x/4 – 138)] = x
বা, x/6 + x/4 + (3x/4) – 414 = x
বা, x/6 + (4x/4) = x + 414
বা, x/6 = 414
বা, x = 2484
সুতরাং, মেজবান অনুষ্ঠানে মোট 2484 জন মানুষ উপস্থিত ছিল। এটাই আমাদের উত্তর।
সাপ্তাহিক সমস্যা-০২: একই পরীক্ষায় তিনটি ভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। পরীক্ষাটি ছিল 100 নম্বরের। একটি ক্লাসে 22 জন ছাত্র ছিল এবং পরীক্ষায় তাদের ক্লাসের গড় নম্বর ছিল 87% । আরেকটি শ্রেণীতে 27 জন ছাত্র ছিল এবং পরীক্ষায় তাদের ক্লাস গড় নম্বর ছিল 83% । সর্বশেষ শ্রেণীতে 31 জন ছাত্র ছিল এবং পরীক্ষায় তাদের ক্লাসের গড় নম্বর ছিল 81%। পিয়াল, রাশিক এবং বিন্দু নামে তিনজন শিক্ষার্থী তাদের ফলাফল নিয়ে আলোচনা করছে। রাশিক বিন্দুর চেয়ে এক নম্বর কম পেয়েছে এবং পিয়াল বিন্দুর চেয়ে এক নম্বর বেশি পেয়েছে। তাদের পরীক্ষাপত্র পর্যালোচনা করার পর রাশিক এবং বিন্দু উভয়েই তাদের খাতায় একটি ত্রুটি খুঁজে পায়: উত্তরপত্রে দেয়া নম্বর যোগ করতে ভুল করা হয়েছে। ফলস্বরূপ, পরবর্তীতে তাদের উভয়ের প্রাপ্ত নম্বর বেড়ে 92 হয়। পিয়াল আবিষ্কার করলো যে, তার উত্তর করা একটি প্রশ্নে কোন নম্বর দেয়া হয়নি। পুনরায় পিয়ালের খাতা যাচাই এর পর তার নম্বর বেড়ে 92 হয়। পিয়াল, রাশিক এবং বিন্দুর এই নম্বরের পরিবর্তনের জন্য সকল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার গড় নম্বর পরিবর্তি হয়ে 84% হয়। তাহলে, নম্বর সংশোধনের আগে পরীক্ষাতে পিয়াল, রাশিক এবং বিন্দু কত নম্বর পেয়েছিল?
Problem Weekly-02: Students in three different classes attended the same exam. The exam was marked out of 100. One class had 22 students in it and, their class average on the exam was reported as 87%. The second class had 27 students in it and, their class average on the exam was reported as 83%. The third class had 31 students in it and, their class average on the exam was reported as 81%. Three students- Pial, Rashik, and Bindu discussed their results. Rashik obtained a mark one less than Bindu and Pial obtained a mark one more than Bindu. Upon reviewing their papers, Rashik and Bindu both discovered additional errors on their papers. Both of their marks increased to 92. Pial discovered that one of his questions had not been marked. This review resulted in his mark increasing to 92 as well. These changes resulted in the exam average for all of the students in the three classes combined changing to exactly 84%.
What marks did Pial, Rashik, and Bindu originally have on their papers before the errors were corrected?
সমাধান: একটি ক্লাসের জন্য শিক্ষার্থীদের মোট নম্বর হবে সবার গড় নম্বর এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যার গুণফলের সমান।
পরীক্ষার খাতায় ভুল বা ত্রুটি ধরা পড়ার আগে-
22 জন শিক্ষার্থী যে শ্রেণিতে আছে তাদের মোট নম্বর ছিল: 22 × 87 = 1914
পরীক্ষার খাতায় ভুল বা ত্রুটি ধরা পড়ার আগে-
27 জন শিক্ষার্থী যে শ্রেণিতে রয়েছে তাদের মোট নম্বর ছিল: 27 × 83 = 2241
পরীক্ষার খাতায় ভুল বা ত্রুটি ধরা পড়ার আগে-
31 জন শিক্ষার্থী যে শ্রেণিতে রয়েছে তাদের মোট নম্বর ছিল: 31× 81 = 2511
তাহলে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা হলো: 22 +27 + 31= 80
এবং এই তিন শ্রেণির শিক্ষার্থীর মোট নম্বর হলো: 1914+2241+2511 = 6666
আবার, পরীক্ষার খাতায় নম্বর কারেকশনের পর এই 80 জন শিক্ষার্থীর গড় নম্বর হয় 84।
তাহলে তাদের মোট নম্বর হবে: 80 × 84 = 6720
তাহলে মোট নম্বরের পরিবর্তন হয়েছে: 6720−6666= 54
পিয়াল, রাশিক এবং বিন্দুর নম্বর বেড়ে যাওয়ার ফলে এই 54 নম্বর বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাপ্তাহিক সমস্যা-০১: সংখ্যাপ্রেমী সৌভিক প্রদত্ত সংখ্যাগুলো {−7, −5, −3, −1, 0, 2, 4, 6, 8} থেকে তিনটি ভিন্ন সংখ্যা নির্বাচন করতে চাইলো। তারপর সে নির্বাচিত তিনটি সংখ্যা গুণ করে সবচেয়ে বড় গুণফলটি বের করার চেষ্টা করলো। সৌভিকের পাওয়া সর্বোচ্চ গুণফলটি কত হতে পারে?
Problem Weekly-01: Number-lover Souvik selects three different numbers from the set {−7, −5, −3, −1, 0, 2, 4, 6, 8}. He then tries to find the highest product of the three chosen numbers. What is the largest product that Number-lover Souvik can make?
সমাধান: যেহেতু আমাদেরকে গুণফল সর্বোচ্চ বানাতে হবে, এজন্য এই সেট থেকে আমাদেরকে বড় সংখ্যা নির্বাচন করতে হবে এবং সে গুণফল অবশ্যই একটি ধনাত্মক সংখ্যা হতে হবে। কিন্তু এখানে একই সাথে ধনাত্মক সংখ্যা এবং ঋণাত্মক সংখ্যা রয়েছে। এটায় একটা ঝামেলা আছে! কেমন ঝামেলা?
আমারা জানি, দুইটি ঋণাত্মক সংখ্যার গুনফল একটি ধনাত্মক সংখ্যা। যেমন:
(−3) × (−5) = 15
আবার, একটি ঋণাত্নক সংখ্যা এবং একটি ধনাত্নক সংখ্যার গুণফল একট ঋণাত্নক সংখ্যা হয়। যেমন:
(−3) × 5 = 15
কাজেই, আমাদেরকে তিনটা সংখ্যাই ধনাত্মক বাছাই করতে হবে অথবা দুইটি ঋণাত্মক সংখ্যা এবং একটি ধনাত্মক সংখ্যা বাছাই করে হবে।
সুতরাং, তিনটি সংখ্যাই ধনাত্মক বাছাই করলে প্রাপ্ত গুণফল হবে-
4 × 6 × 8= 192
এটাই কি সর্বোচ্চ গুণফল হবে? এর বেশি কি পাওয়া সম্ভব হবে না?
হ্যাঁ, সম্ভব হবে! আমরা যদি দুইটি ঋণাত্মক সংখ্যা এবং একটি ধনাত্মক সংখ্যা বাছাই করি, তাহলে প্রাপ্ত গুণফল হবে-
(-7) × (−5) × 8 = 280
এটাই আমাদের প্রাপ্ত সর্বোচ্চ গুণফল!!
অনেকেই আমাদের উত্তর পাঠিয়েছেন। আমরা মোট ১২ জন সঠিক উত্তরদাতা পেয়েছি। তাই আমাদের সাপ্তাহিক সমস্যা-০১ এর বিজয়ী মোট ১২ জন!
Tanay Paul
Rajdhani High School
Sanjoy Kumar
Rajshahi University
Namia Rauzat
HURDCO International School
Areeba Adreeta
Viqarunnisa noon school and college
Aariz Abdullah
Shaheed Police Smrity College
Bihan Paul
Ideal School and College
Sreema Chowdhury
Bangladesh Mahila Samity Girls’ High School And College
Nawshin Anjum Murshed Rupkotha
MUBC
Ahnaf Tahmid Saklain
Rajshahi University School And College
Kawser Mahamud Junyed
Hariharpara High School
Md Al Amin
Notre Dame College Dhaka
Md.Sajedul Hasan Nasim
University of Chittagong
যারা উত্তর পাঠিয়েছেন, সবাইকে অভিনন্দন। আশা করি আপনাদের সমস্যা সমাধানের এই যাত্রা অব্যাহত থাকবে।
সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক! (আমাদের অন্যান্য গাণিতিক সমস্যা দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।)
শুরু করছি ইউক্লিডের একটি বিখ্যাত্য উক্তি দিয়ে। উক্তিটির ইতিহাসটাও চমৎকার। একবার রাজা প্রথম টলেমি ইউক্লিডকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘এলিমেন্টস ছাড়া জ্যামিতি শেখার সহজ কোনো পথ আছে কি?’
তখন ইউক্লিড তার সেই বিখ্যাত উক্তিটি করেন, যার বাংলা অনুবাদটি হচ্ছে কিছুটা এরকম-
“জ্যামিতি শেখার কোনো রাজকীয় পথ নেই”
যদিও আসলে এখানে “Royal Road” বলতে শর্টকার্টের কথা বোঝানো হয়। ইতিহাসের পাতা থেকে আমরা দেখতে পাই পারস্য রাজা Darius বা Darius the Great তার বিশাল সামাজ্যে শর্টকাটে দ্রুত যোগাযোগ ব্যাবস্থা স্থাপনের লক্ষে “The Royal Road” টি তৈরী করেছিলেন।
জ্যামিতির কথা বলতে শুরু করলে সবার আগে যে নামটি মাথায় আসবে সেটি হলো বিখ্যাত গ্রিক গণিতজ্ঞ ইউক্লিড। যার একটি বিখ্যাত্য গ্রন্থ হলো “এলিমেন্টস”। এটি জ্যামিতির জন্য বিখ্যাত হলেও এতে সংখ্যাতত্ত্বের অনেকগুলো বিষয় যেমন: পারফেক্ট নাম্বার ও মার্জেন প্রাইমের মধ্যকার সম্পর্ক এবং গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক বের করার ইউক্লিডীয় এলগরিদম বর্ণনা করা আছে। ইউক্লিড খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতকের গণিতবিদ ছিলেন। তিনি বুঝতে পারেন যে, তার সময়কার বিভিন্ন জ্যামিতিক উপপাদ্যগুলিকে খুবই অল্প সংখ্যক স্বতঃসিদ্ধের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা সম্ভব। মাত্র পাঁচটি স্বতঃসিদ্ধ থেকে সকল সমতলীয় বা ইউক্লিডীয় জিওমেট্রি ব্যাখ্যা করা যায়। সেগুলো হলো─
১) যেকোন দুইটি প্রদত্ত বিন্দুর মধ্য দিয়ে শুধুমাত্র একটি সরলরেখা আঁকা সম্ভব।
২) কোন সরলরেখাকে অসীম পর্যন্ত প্রসারিত করা যায় কিংবা যেকোন বিন্দুতে সীমাবদ্ধ করা যায়।
৩) যেকোন বিন্দুকে কেন্দ্র ধরে ও যেকোন ব্যাসার্ধ (বৃত্তের যেকোন বিন্দু থেকে কেন্দ্রের দূরত্ব) নিয়ে একটিমাত্র বৃত্ত আঁকা সম্ভব।
৪) সব সমকোণ সবসময় সমান।
৫) একটি প্রদত্ত সরলরেখার বহিঃস্থ একটি প্রদত্ত বিন্দু দিয়ে প্রথম সরলরেখার সমান্তরাল কেবলমাত্র একটি সরলরেখা আঁকা সম্ভব।
জ্যামিতির সবচেয়ে চমৎকার জিনিস হলো এটা দৃশ্যমান। আমরা চোখের সামনে ছবি এঁকে বুঝতে পারি, প্রমাণ করতে পারি, খেয়াল খুশি মত প্রয়োজনীয় চিত্র আঁকতে পারি। তবে একটি কথা মাথায় রাখতে হবে, প্রমাণ করতে হবে যুক্তি দিয়ে, স্বীকার্য দিয়ে, উপপাদ্য দিয়ে। এখানে নিজের মনে হলো তাই এটাই হতে হবে, এরকম কিছু কাজ করে না। অথবা, অমুক এটা বলছে বলে এই রেখাটা সমদ্বিখন্ডক হবে─ এরকম কথার কোনো ভিত্তি নেই। এবং প্রমাণ করতে হবে ধাপে ধাপে, যে কোন প্রমাণের প্রতিটি ধাপকে হয় কোন স্বতঃসিদ্ধ অথবা পূর্ব-প্রমাণিত কোন উপপাদ্য দিয়ে সমর্থিত হতে হয়। সঠিকভাবে জ্যামিতির চিত্র আঁকতে পারলে তোমার চোখের সামনে অনেক কিছু দৃশ্যমান হয়ে উঠবে। যেখান থেকে তুমি খুঁজে পেতে পারো তোমার কাঙ্ক্ষিত তথ্য, যা প্রমাণের বিভিন্ন ধাপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ইউক্লিডীয় জ্যামিতি খুব সুন্দর করে পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করা আছে। আছে অনুশীলনীর জন্য অনেকগুলো সমস্যা। যে কেউ যদি বুঝে বুঝে সময় নিয়ে এই সমস্যাগুলো সমাধানের চর্চা করে, তাহলে এই বিষয়ে প্রাথমিক ভিত্তি তৈরী হয়ে যাবে। এরপর, জ্যামিতির অন্য যে কোন বই পড়তে কিংবা তাত্ত্বিক বিষয় বুঝতে খুব একটা সমস্যা হবে না।
জ্যামিতির সাহায্যে গণিতের আরো অনেক বিষয়ের গাণিতিক প্রমাণ আমরা সহজে বুঝতে পারি। আমরা বীজগণিতের প্রাথমিক ধারণা লাভ করার সময় বন্ধনীর ব্যবহার, একাধিক চলকের মধ্যে যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগ ইত্যাদি কিভাবে হয় সেটা শিখে থাকি। আসলে (a + b) 2 = a 2 + 2ab + b 2 এটা কিভাবে হলো সেটা জ্যামিতিক চিত্র দিয়ে সহজে বোঝানো যায়।
আবার, আমরা সবাই সংখ্যা চেনার পর থেকে কিন্তু সংখ্যারেখার সাথে পরিচিতি হই। সংখ্যারেখায় সকল বাস্তব সংখ্যাকে কিন্তু চিহ্নিত করা যায়। পূর্ণ সংখ্যাগুলো আমরা সহজেই দেখাতে পারি সংখ্যারেখাতে । আচ্ছা, তোমরা কি অমূলদ সংখ্যা বা √2 সংখ্যাটিকে সংখ্যারেখায় দেখাতে পারবে? জ্যামিতির ধারণা দিয়ে কিন্তু চাইলেই √2 সহ আরো অনেক অমুলদ সংখ্যাকে সংখ্যারেখায় দেখানো সম্ভব। এখন একটু চিন্তা করো, কেন আমি সকল অমূলদ সংখ্যা না বলে আরো অনেক অমূলদ সংখ্যা বলেছি? কেন?
এছাড়া, তোমরা যারা অরিগ্যামি, ট্যানগ্রাম ইত্যাদির নাম শুনেছো তারা হয়তো বুঝতে পারছো এগুলোর পেছনে জ্যামিতির অনেক ধারণা লুকিয়ে আছে। এগুলো নিয়ে অনেক ঐতিহাসিক গল্প আছে, খুঁজে দেখতে পারো। একটা সমস্যা দিচ্ছি, সমাধান করার চেষ্টা করতে পারো: ট্যানগ্রামে আসলে একটি বর্গাকার কাগজকে বিভিন্ন উপায়ে সাতটি টুকরো করা হয়। সাতটি টুকরোর মধ্যে পাঁচটি ত্রিভুজ, একটি সামান্তরিক এবং একটি বর্গ পাওয়া যায়। একটু চিন্তা করে বলো তো, ছোট বর্গটির ক্ষেত্রফল মূল কাগজের কত অংশ হতে পারে?
আসলে জ্যামিতি কিন্তু এখন শুধুমাত্র ভূমির পরিমাপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না। এটি যুক্তি এবং প্রমাণের একটি চমৎকার স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থাপন। জ্যামিতি হলো একটি ছোট জানালা যেটির সাহায্যে বীজগণিতের বৈশিষ্ট্যগুলো প্রকাশিত হয়, যার মাধ্যমে তুমি ‘কেন’ এর উত্তর আবিষ্কারের আনন্দে বিভোর হয়ে যাবে।
“Geometry is the most complete science” — David Hilbert
এটাই জ্যামিতি!! (এ ধরণের আর্টিকেল আরো পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।)
তুমি কি কখনো একটা ১ টাকার কয়েনকে টস করে কোন খেলা শুরু করতে দেখেছ? অথবা কখনো ১ টাকার কয়েনকে টস করে ক্রিকেট খেলায় কে আগে ব্যাট করবে, আর কে আগে বল করবে এটা নির্ধারণ করেছ?
আচ্ছা বলতো, একটা এক টাকার কয়েনকে টস করলে শাপলা উঠার সম্ভাবনা কত? একটু চিন্তা করে দেখো…
একটু চিন্তা করলেই আমরা কিন্তু বলে দিতে পারি, একটা ১ টাকার কয়েন টস করলে হয় মানুষের ছাপটা উঠবে, না হয় শাপলার ছাপের পিঠটা। অর্থাৎ, ফিফটি-ফিফটি চান্স বা শাপলার পিঠ উঠার সম্ভাব্যতা অর্ধেক।
আবার মনে কর, তোমার বাসার সবাই মিলে লুডু খেলতে বসলে। তুমি মাত্র লুডুর ছক্কা নেড়ে বোর্ডে ছুঁড়ে মারলে। এখন বলো তো, ছক্কার গুটি বোর্ডে পড়া মাত্রই ৫ উঠার সম্ভাবনা কত? এটাও তুমি জানো। যেহেতু ছক্কার ছয়টা পিঠ আছে, আর এই ছয়টা পিঠে ১ থেকে ৬ পর্যন্ত সংখ্যা লিখা আছে, তাই ৫ উঠার সম্ভাবনা ছয় ভাগের এক ভাগ।
এখান থেকে আমরা একটা জিনিস খেয়াল করতে পারি যে, কোন একটি ঘটনা ঘটার সম্ভাব্যতা =অনুকূল ঘটনার ফলাফলের সংখ্যা / মোট ফলাফলের সংখ্যা
অনুকূল ঘটনার ফলাফল বলতে আমরা, একটি ঘটনার ঘটার সকল সপক্ষের ফলাফল সংখ্যাকে বুঝিয়েছি। যেমন, ছক্কার গুটিতে জোড় সংখ্যা আছে ৩ টি। সুতরাং জোড় সংখ্যা ওঠার সম্ভাব্যতা নির্ণয়ের জন্য অনুকূল ঘটনার ফলাফল ৩ টি।
অতএব, কয়েন টসের ক্ষেত্রে শাপলা উঠার সম্ভাব্যতা =শাপলা ছাপযুক্ত পিঠের সংখ্যা / কয়েনের মোট পিঠের সংখ্যা=১/২
ছক্কার গুটিতে ৫ উঠার সম্ভাব্যতা =৫ অঙ্কটি লেখা আছে এমন তলের সংখ্যা / ছক্কার মোট তলের সংখ্যা= ১/৬
অতএব সম্ভাব্যতায় যে কোন একটি ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা যাচাইয়ের আগে আমাদের তাই বের করে নিতে হয়, সেই ঘটনার ক্ষেত্রটা কত বড়(মোট সংখ্যা, ক্ষেত্রফল, পরিমাণ ইত্যাদি)। তারপর বের করতে হয়, ঘটনাটি ঘটবেই এমন ক্ষেত্রটাই বা কতটুকু (অনুকূল ঘটনাক্ষেত্রের আকার)। তারপর অনুকূল ঘটনা ক্ষেত্রকে লব আর মোট ঘটনাকে হর ধরে আমরা সম্ভাব্যতা নির্ণয় করি।
এবার একটা ভিন্ন কিছু নিয়ে চিন্তা করা যাক। মনে কর, তুমি একটি রোবট বানালে, যে গড়পড়তা প্রতি চারটি তথ্যের তিনটি সঠিক তথ্য দেয় । এখন তোমার বন্ধু সাদ তোমার বাসায় বেড়াতে এসেছে। সে তোমাকে খুঁজে না পেয়ে তুমি কোথায় আছ সেটা রোবটটাকে জিজ্ঞাসা করল। রোবটটা সাদকে প্রথমে উত্তর দিকে, তারপর পূর্ব দিকে এবং এরপর দক্ষিণে যেতে বলল। সেখানে গিয়ে সাদ তোমাকে খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা কত? খেয়াল কর, সাদ কিন্তু নিশ্চিত করে বলতে পারছে না, রোবটের দেয়া তিনটি তথ্যের প্রত্যেকটি তথ্যই সঠিক কিনা। সুতরাং, আমরা আগের মত সহজ ভাবে সম্ভাবনাটা খুঁজে বের করতে পারবো না।
আমরা একটা ভিন্ন রাস্তায় সম্ভাব্যতাটা নির্ণয় করতে পারি। যেহেতু রোবটটি গড়পড়তা প্রতি চারটি তথ্যের তিনটিই সঠিক উত্তর দেয়, সুতরাং রোবটটি যখন সাদকে উত্তরে যেতে বলেছে তখন তথ্যটি সঠিক হওয়ার সম্ভাব্যতা ৩/৪, পূর্বে যাওয়ার তথ্যটিও সত্য হওয়ার সম্ভাব্যতা ৩/৪ এবং দক্ষিণে যাওয়ার তথ্যটিও সত্য হওয়ার সম্ভাব্যতা ৩/৪ ।
সুতরাং, রোবটের দিক নির্দেশনা শুনে সাদের তোমাকে খুঁজে পাবে তার সম্ভাব্যতা = ১ম তথ্য সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা এবং ২য় তথ্য সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা এবং ৩য় তথ্য সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা = ৩/৪*৩/৪ *৩/৪= ২৭/৬৪
একটা মজার ব্যাপার কি খেয়াল করলে? এখানে আমরা প্রতিটি একক সম্ভাব্যতাকে আগে খুঁজে বের করেছি। তারপর তাদের গুণ করেছি। কিন্তু এখানে গুণ কেন করলাম? যোগ কেন করলাম না? গণিতবিদেরা এমন সব সমস্যার সমাধান করার জন্য যে কোন ঘটনাকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী পার্থক্য করতে চেয়েছেন। এর মধ্যে দুইটি হল, স্বাধীন ঘটনা ও অধীন ঘটনা। নাম শুনেই বুঝতে পারছো, স্বাধীন ঘটনার ক্ষেত্রে দুইটি ঘটনার একটি ঘটার সম্ভাবনা অপরটি ঘটার উপর নির্ভর করে না। যেমন ধর, দুইটি এক টাকার কয়েনকে আমরা পাশাপাশি টস করলে একটায় শাপলা ওঠার সম্ভাবনা অপরটিতে শাপলা ওঠার উপর নির্ভর করে না। তাই ঘটনা দুইটি স্বাধীন।
অন্যদিকে অধীন ঘটনায় একটি ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অপর ঘটনা ঘটার উপর নির্ভর করে। যেমন: যদি একটা বাক্সে ৪টা লাল বল আর ৩টা হলুদ বল থাকে আর তুমি বাক্স থেকে প্রথমে একটা বল তুলে নাও তাহলে সেটা লাল হওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু, ৪/৭ । এখন বলটা যদি লাল হয় আর তুমি যদি ওই বলটা বাক্সে না রাখ তাহলে বাক্সে লাল বল হয়ে গেলো ৩ এবং মোট বলের সংখ্যা হয়ে গেলো ৬। আরো একটা বল তুলে ফেলো, নতুন বলটি লাল হওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু ৩/৬ বা ১/২ ! খেয়াল কর, এখানে পরের বলটা লাল হওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু প্রথম বলটা লাল হওয়ার সম্ভাবনার উপর নির্ভর করছে। তাই ঘটনা দুইটি একে অপরের অধীন বা নির্ভরশীল।
এখন যদি আমরা রোবটের সমস্যায় ফিরে যাই, তাহলে আমরা দেখতে পারব, রোবটটা তিনটা দিকনির্দেশনার একটা ভুল দিলেই সাদ তোমাকে খুঁজে পাবে না। যেহেতু প্রত্যেকটি নির্দেশনা আলাদা আলাদা ভাবে ঘটেছে, এবং আগের নির্দেশনা ও পরের নির্দেশনা সত্য হলেই কেবল সাদ তোমাকে খুঁজে পাবে তাই আমরা সম্ভাব্যতাগুলোকে গুণ করেছি! আরেকটু বাড়িয়ে বললে, পূর্বে যাওয়ার নির্দেশনা সত্য হবে যদি উত্তরে যাওয়ার নির্দেশনা সত্য হয় যা, উত্তরে যাওয়ার সম্ভাবনা সত্য হওয়ার ৩/৪ গুণ। যেহেতু উত্তরে যাওয়ার নির্দেশনা সত্য হওয়ার সম্ভাব্যতা ৩/৪, তাই পূর্বে যাওয়ার নির্দেশনা সত্য হওয়ার সম্ভাব্যতা ৩/৪*৩/৪ ।
আবার যদি দুই বা তার বেশি ঘটনার মধ্যে একটি ঘটনা ঘটলে অপর ঘটনা বা ঘটনাগুলো একই সাথে না ঘটে তাহলে ঘটনা দুইটি পরষ্পর বর্জনশীল। যেমন কয়েন টস করলে শাপলা উঠলে মানুষ উঠবে না। ঠিক তার উল্টোভাবে, যদি দুই বা ততোধিক ঘটনা একইসাথে ঘটতে পারে তাহলে ঘটনা দুইটি পরষ্পর অবর্জনশীল। যেমন: ছক্কার গুটিতে একইসাথে জোড়সংখ্যা ও মৌলিক সংখ্যা ওঠার ঘটনা একটি অবর্জনশীল ঘটনা। বলতে পারো ছক্কার গুটিতে এমন কয়টি সংখ্যা আছে যারা একই সাথে জোড় ও মৌলিক?
এতক্ষনে তুমি হয়ত বেশ কিছু ব্যাপার খেয়াল করে ফেলেছো, আমাদের যেকোন ঘটনা ঘটার সম্ভাব্যতা কিন্তু ১ এর চেয়ে বেশি নয়। আবার, আমরা এমন কোন ঘটনা দেখিনি যেটা ঘটার সম্ভাব্যতা ০। সুতরাং আমরা বলতে পারি, যেকোন একটি ঘটনা A ঘটার সম্ভাব্যতা,
P(A) > ০ এবং P(A) < ১
বা, ০ <P(A) < ১
অর্থাৎ, অসম্ভব ঘটনা ঘটার সম্ভাব্যতা ০ এবং নিশ্চিত ঘটনা ঘটার সম্ভাব্যতা ১। তাই আমরা লিখতে পারি,
০ ≤P(A) ≤ ১
আবার ধর, তুমি তোমার স্কুলের ল্যাবে কোন একটা পরীক্ষা করে পরীক্ষণের অনেকগুলো ফলাফল A, B, C… ইত্যাদি পেলে। সুতরাং, এদের প্রত্যেকের ঘটার সম্ভাব্যতা,
P(A) + P(B) + P(C) + …….. = ১
আমরা এই ধারণাগুলো ব্যবহার করে আমাদের সমস্যাগুলো সমাধান করবো। গণিতে সম্ভাব্যতার ধারণা খুব পুরনো কোন ধারণা নয়। মাত্র ৪০০ বছর আগে এই ধারণার বিকাশ ঘটতে শুরু করে। পাশা খেলার বোর্ড থেকে গণিতের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ একটি শাখা হয়ে ওঠার গল্পটাও বেশ চমকপ্রদ! পাকা জুয়াড়ি চেভালিয়ার দ্য মেরে (Chevalier de Mere) জুয়া খেলার বোর্ডে কোন দানটি উঠলে বেশি লাভজনক হবে তা নিয়ে এন্টনি গম্বুড (Antoine Gombaud) এর সাথে ঝগড়া বাধিয়ে গণিতবিদ প্যাসকেল (Pascal) আর ফার্মার (Fermat) কাছে সমাধান চেয়ে চিঠি লিখলেন। সেখানে থেকে উৎপত্তি হয় গণিতের এই চমৎকার তত্ত্বটির। ১৮১২ সালে, ল্যাপ্লাস (Laplace) এই তত্ত্বটিকে জুয়া খেলার বোর্ড থেকে বাস্তব জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োগ নিয়ে এসে আলোচনা করেন তার Théorie Analytique des Probabilités বইয়ে। এভাবেই গণিত আর বিজ্ঞানের জগতে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকে সম্ভাব্যতার ধারণা।
শেষ করার আগে চলো আরেকটু সময়ের জন্য আমরা আবার প্রথম প্রশ্নে ফিরে যাই। তোমার কি মনে আছে, আমি তোমাকে বলেছিলাম, একটা এক টাকার কয়েনকে টস করলে শাপলা উঠার সম্ভাবনা ১/২?
কিন্তু, বাস্তবে কথাটি কতটুকু সত্য? এটার মানে কি তুমি যদি একটা ১ টাকার কয়েন হাতে নিয়ে ২ বার টস করো, তাহলে একবার মানুষ আরেকবার শাপলা উঠবে? কয়েকবার নিজে করে দেখলে খেয়াল করবে, প্রতি দুইবার টসে সবসময়ই এক বার মানুষ আরেকবার শাপলা উঠছে না। তাহলে, কি আমাদের হিসাবটা ভুল? কিন্তু ভুল হলে কি আমরা সম্ভাব্যতাকে গণিতে বা বিজ্ঞানে এত ব্যবহার করতে পারতাম?
নিশ্চয়ই ১ টাকার কয়েনে ১ উঠার সম্ভাব্যতা ১/২ হওয়ার ব্যাপারটা সত্য হওয়ার পিছনে আরও কিছু যুক্তি দিয়ে সুন্দরভাবে দেখানো যেতে পারে। সেটা কি, চিন্তা করে বের করতে পারবে?
সম্ভাব্যতার গভীর চিন্তাটা আসলে এখান থেকেই শুরু হয়।
সেই চিন্তার জগতে তোমাকে স্বাগতম! (এ ধরণের আরো আর্টিকেল পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন।)
ছোটবেলায় বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হলেই নানার বাড়িতে বেড়াতে যেতাম। সারাবছর এই সময়ের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম, কারণ বেড়াতে গেলেই মামাদের সাথে এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়ানো যেতো, কারো কোন বকুনি খেতে হতো না। ছোট মামা ছিলো বুদ্ধির ঢেঁকি। প্রতিবার গেলে কঠিন কঠিন সব বুদ্ধির প্রশ্ন করতো, আর তার উত্তর নিয়ে ভাবতে ভাবতে আমাদের দিন পেরিয়ে রাত নেমে যেতো। উত্তর দিতে পারলে অবশ্য লাভ হতো, বিজয়ীর বেশে ছোট মামার সাথে বাজারের দোকানে যেয়ে পছন্দমতো জিনিস কেনা যেতো (অবশ্য না পারলেও কেনাকাটা হতো, তখন কম হতো আরকি!)। এজন্য আমরা ছোটরা সবাই আমাদের প্রিয় মামার পেছনে ঘুরঘুর করতাম, তার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য জীবন দিয়ে চেষ্টা করতাম।
একবার ছোট মামা বাড়িতে একটি লকার নিয়ে আসলেন, নাম দিলেন ‘জাদুর লকার’। অদ্ভুত সে লকার, মামার দেয়া একটি ‘গোপন সংখ্যা’ ছাড়া নাকি সেটা খুলবে না। আমাদের বিস্ময়ের কোন শেষ নেই, এমন লকারও বুঝি পৃথিবীতে আছে! ছোট মামা লকারের ‘গোপন সংখ্যা’ বের করার জন্য পুরষ্কার ঘোষণা করলেন। এজন্য তিনি আমাদের কিছু তথ্য দিলেন যাতে আমরা মাথা খাটিয়ে সেটা বের করতে পারি। ছোট মামার তথ্য ছিলো এরকম, ‘লকারের গোপন সংখ্যা বা পাসওয়ার্ড তিন অঙ্কের একটি সংখ্যা যার সবগুলো অঙ্কই বিজোড়। গোপন সংখ্যায় 7 অঙ্কটি নেই, এবং কোন অঙ্কই একবারের বেশি ব্যবহৃত হয়নি। অঙ্কগুলো কোন ক্রমে আছে তাও অজানা।’
তাহলে, এই লকারের গোপন সংখ্যা আমরা কিভাবে বের করবো? তাও আবার লকারেই সেটা চেষ্টা না করে? অঙ্ক করে কি এটা বের করা সম্ভব??
প্রথমে আমরা বের করার চেষ্টা করি, চারটি বিজোড় অঙ্ক দিয়ে (1, 3, 5 ও 9) তিন অঙ্কের কোন কোন সংখ্যা পাওয়া যায়। এখানে মোট 24টি ভিন্ন ভিন্ন তিন অঙ্কের সংখ্যা পাওয়া সম্ভব। যেমন:
{135, 139, 153, 159, 193, …. 913, 931, 953}
যদিও মোট 24টি ভিন্ন সংখ্যা আমরা পেয়েছি, এবং এদের সবগুলোই স্বার্থক তিন অঙ্কের সংখ্যা, কিন্তু এদের একটিমাত্র সংখ্যা দিয়েই লকারটি খুলবে। বাকি 23টি সংখ্যা ভুল হিসেবে গণ্য হবে কারণ গোপন সংখ্যার ক্ষেত্রে ক্রম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। যেমন: লকারের গোপন সংখ্যাটি যদি 319 হয়, তাহলে এককের স্থানে 9 কেই বসাতে হবে, 3 কিংবা 5 বসালে লকার খুলবে না। যদি আমাদের লকারে কোন ক্রমের শর্ত না থাকতো, নির্দিষ্ট তিনটি অঙ্ক জানলেই লকারটি খোলা যেতো, তাহলে উপরের 24টি সংখ্যার যে কোনটি দিয়েই কিন্তু লকারটি খুলে যেতো। একটা জিনিস তাহলে আমাদের কাছে পরিষ্কার: এ ধরণের সমস্যা সমাধানে ক্রমের শর্ত ‘থাকা’ কিংবা ‘না থাকা’ উভয়টিই খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।
ক্রমের শর্তের উপর ভিত্তি করে সংখ্যা বা অন্য যে কোনো জিনিস কত উপায়ে সাজানো যায়, কতভাবে তৈরি করা যায়, এমনকি কতভাবে বাদ দেয়া যায় ইত্যাদি জিনিস গণিতের কিছু সুন্দর ধারণা ব্যবহার করে সমাধান করা যায়। এদের একটি হলো ‘বিন্যাস’ (Permutation), আরেকটি হলো ‘সমাবেশ’ (Combination)।
উপরে দেয়া চারটি অঙ্ক ব্যবহার করে (যেখানে প্রত্যেকটি একবার করে ব্যবহৃত হয়েছে) আমরা সম্ভাব্য চব্বিশটি ভিন্ন তিন অঙ্কের সংখ্যা পেয়েছি। এখানে ক্রম গুরুত্বপূর্ণ ছিলো, অর্থাৎ আগে বা পরে কোন অঙ্কটি বসবে সেটা গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। এ ধরণের ঘটনাকে আমরা বলবো ‘বিন্যাস’। অপরদিকে, যদি ক্রমের শর্ত গুরুত্বপূর্ণ না হতো, নির্দিষ্ট তিনটি অঙ্ক যেভাবে ইচ্ছা বসিয়ে তিন অঙ্কের একটা সংখ্যা হলেই আমাদের উদ্দেশ্য পূর্ণ হতো, এমন ঘটনাকে আমরা বলবো ‘সমাবেশ’।
গাণিতিকভাবে আমরা আরেকটু বুঝার চেষ্টা করি। ধরো, তোমার কাছে r সংখ্যক বাক্স আছে যার প্রতিটিতে একটি করে বস্তু বা জিনিস রাখা যায়। তুমি যদি n সংখ্যক বল দিয়ে এই বাক্সগুলো পূর্ণ করতে চাও, তাহলে কতভাবে সেটা সম্ভব? ক্রম থাকা বা না থাকার উপর কি হিসেব নির্ভর করবে? চলো আমরা কিছু হিসেব-নিকেশ করার চেষ্টা করি─
প্রথম বাক্স বল দ্বারা পূর্ণ করার উপায় হবে: n টি
দ্বিতীয় বাক্স বল দ্বারা পূর্ণ করার উপায় হবে: n – 1 টি
তৃতীয় বাক্স বল দ্বারা পূর্ণ করার উপায় হবে: n – 2 টি
…………………………………………………………………………
r তম বক্স বল দ্বারা পূর্ণ করার উপায় হবে: [n – (r – 1)] টি
তাহলে, n সংখ্যক বল দ্বারা r সংখ্যক বাক্স পূর্ণ করার (যেখানে ক্রম গুরুত্বপূর্ণ, প্রত্যেকটি বল একবারই নেয়া হবে, 0 < r <= n) মোট উপায় হবে─
n* (n – 1) * (n – 2) * (n – 3) … … …(n – r + 1)
বা, P(n, r)=n* (n – 1) * (n – 2) … … …(n – r + 1)
বা, nPr=n! / (n – r)!
(এখানে, n!=n* (n – 1) * (n – 2)… … …3 * 2 * 1)। P(n, r) কে আরেকভাবে লিখার উপায় হলো nPr, দুইটি টার্ম একই উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়)
অর্থাৎ, বিন্যাসের ক্ষেত্রে আমরা লিখতে পারি─
nPr=n! / (n – r)!
অপরদিকে, সমাবেশের ক্ষেত্রে ‘ক্রম’ গুরুত্বপূর্ণ না। কাজেই, উপরের উদাহরণের ক্ষেত্রে সমাবেশ সংখ্যা হবে (প্রতিটি বল একবার করেই নেয়া হবে)─
C(n, r) বা nCr = n! / [ (n – r)!* r! ]
এখানে কেন r! দিয়ে ভাগ দেয়া হলো? বিন্যাস ও সমাবেশের মধ্যে কি তাহলে কোন সম্পর্ক আছে? থাকলে সেটা কিভাবে বের করা যাবে?
বিন্যাস ও সমাবেশ সংক্রান্ত তত্ত্বীয় আলোচনা এবং গাণিতিক সমস্যা আমাদের দেশে কলেজ পর্যায়ে পড়ানো হয়। কেউ আরো জানতে চাইলে এই লিঙ্কে গিয়ে বিস্তারিত পড়া যাবে।
ভালো কথা, ছোট মামার লকারের গল্পটা তো শেষ হয়নি। এতোক্ষেণে বুঝে গেছো যে, ‘গোপন সংখ্যা’ নিশ্চিত হওয়ার জন্য ছোট মামার দেয়া তথ্য যথেষ্ট ছিলো না। আমাদের প্রবল উৎসাহ দেখে ছোট মামা শেষ একটা তথ্য গানের সুরে সুরে দিলেন─
‘এককের ঘরে অঙ্ক যে আছে রে, তার উৎপাদকদের পাইবে তুমি অন্য দুটি ঘরে, সবচে ছোটজন থাকিবে সবার শুরুতে, সংখ্যাটি কি হবে তা বলিতে কি পারিবে?’
আমি সাথে সাথেই চিৎকার দিয়ে গোপন সংখ্যাটি বলে দিলাম। তুমি কি বলতে পারবে সেটা কত ছিলো?
হ্যাপি প্রব্লেম সলভিং!! (প্রব্লেম সলভিং সক্রান্ত নতুন আর্টিকেল পড়োতে চাইলে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।)
কাসেম, খালেক ও গালিব, তিন ভাই। শহরে একসঙ্গে থাকে ওদের বাবা-মার সঙ্গে। তিন ভাই বেশ বুদ্ধিমান এবং যুক্তি দিয়ে কাজ করতে আগ্রহী। ৩০০ কিলোমিটার দূরে অন্য একটি শহরে ওদের বড় মামার বাড়ি। । অতিমারীর সময় ওরা একদিন খবর পেল তাদের মামা বিপদে পড়েছেন এবং তার সহায়তা দরকার। মামাকে সাহায্য করার জন্য তিনজনই যাবে ঠিক করলো। কিন্তু আন্তঃশহর বা দূরপাল্লার ট্রেন, বাস বন্ধ। কাজে, মামার বাড়ি পৌঁছানোর একমাত্র বাহন হলো বাসার মোটরসাইকেল। কিন্তু সেটি একবারে মাত্র দুইজনকে নিতে পারে। ওরা তিনজনের প্রত্যেকে ঘণ্টায় ১৫ কি.মি. বেগে হাঁটতে পারে এবং মোটরসাইকেলটি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে। বাবা-মাকে বলে ওরা তিনভাই সকালে রাস্তায় নেমে আসলো। প্রশ্ন হচ্ছে, সবচেয়ে কম কতো সময়ের মধ্যে তিন ভাই বড় মামার বাড়ি গিয়ে পৌঁছাতে পারবে?
এই প্রশ্নের সহজ যে সমাধান মাথায় আসে সেটা হলো, কাসেম ও খালেক মোটর সাইকেলে রওনা দেবে, গালিব হাঁটতে থাকবে। কাসেম মামার বাড়িতে গিয়ে খালেককে নামিয়ে আবার ফিরে আসবে। এর মধ্যে গালিব হাঁটতে হাঁটতে অনেকখানি পথ অতিক্রম করবে, কাসেম এসে তাকে নিয়ে যাবে। কিন্তু এই সমাধান আসলে সর্বোত্তম সমাধান নয়। কারণ কাসেম যখন গালিবকে রাস্তা থেকে তুলে ফের মামার বাড়ির দিকে যাবে, তখন খালেক মামার বাড়িতে বেকার বসে থাকবে। ফলে সময় কমানোর কাজে তার কোন অবদান থাকবে না। তাহলে আমাদের সমাধান কী হবে? কিভাবে আমরা একটা ভালো সমাধানে পৌঁছাতে পারি?
প্রথমত, আমাদের এমনভাবে তিনজনকে কাজে লাগাতে হবে যেন তারা তিনজনে মিলে বাড়িতে পৌঁছানোর সময় কমিয়ে আনতে পারে। এর একটাই অর্থ, সেটা হলো কাসেম ও খালেক মোটর সাইকেলে রওনা হলেও তারা দুজনই মামার বাড়িতে পৌঁছানো ঠিক হবে না। বরং, রাস্তায় এমন এক স্থানে কাসেম খালেককে নামিয়ে দেবে যেন সে বাকী রাস্তা হেঁটে যেতে পারে। অন্যদিকে, কাসেম আবার গিয়ে গালিবকে নিয়ে আসতে পারবে। এক্ষেত্রে, দুটো ঘটনা ঘটতে পারে।
ক. কাসেম ও গালিব মোটর সাইকেল নিয়ে খালেকের আগেই মামার বাড়িতে পৌঁছে যাবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে খালেক আসা পর্যন্ত তাদের অলস সময় পার করতে হবে।
খ. কাসেম ও গালিব আসার আগে খালেক হেঁটে হেঁটে মামার বাড়িতে পৌঁছে যাবে আগেভাগে। সেক্ষেত্রে, তাকেও অলস সময় কাটাতে হবে।
কাজে, আমাদের পথের মধ্যে সে পয়েন্টটা বের করতে হবে যেখান থেকে খালেক হেঁটে যে সময়ে মামার বাড়িতে পৌঁছাবে, একই সময়ে কাসেম ও গালিবও এসে পৌঁছাবে। তখন তারা তিনজনই একই সময়ে গন্তব্যে বা মামার বাড়িতে পৌঁছাবে।
এই সমস্যার সমাধান নানাভাবে করা যেতে পারে। এখানে দুইটি কাল্পনিক চিত্রের সহায়তা নিচ্ছি। ধরা যাক, A বিন্দুতে ওদের বাড়ি এবং B তাদের মামার বাড়ি।
কাসেম ও খালেক মোটরসাইকেলে করে D বিন্দুতে যাওয়ার পর কাসেম খালেককে সেখানে নামিয়ে দিল। একই সময়ে, গালিব হেঁটে হেঁটে A বিন্দু থেকে C বিন্দুতে পৌঁছাবে। ধরি, AC=x; যেহেতু মটরসাইকেলের গতিবেগ হাঁটার চারগুণ, কাজে একই সময়ে কাসেম ও খালেক কিন্তু চারগুণ দূরত্ব অতিক্রম করবে। তার মানে হলো, AD=4x এবং CD=3x
এখন D বিন্দুতে খালেককে নামিয়ে কাসেম গালিবকে নেওয়ার জন্য ফিরতি পথে যাত্রা করবে। কাসেম যতক্ষণে গালিবের কাছে পৌঁছাবে ততক্ষণ গালিব ও খালেক কিন্তু হাঁটতেই থাকবে। ধরি, এই সময়ে গালিব C থেকে E এবং খালেক D থেকে F বিন্দুতে পৌঁছাবে। যেহেতু তারা দুজনের হাঁটার গতি সমান, কাজে, CE=DF=p (মনে করি)
এই সময়ে কাসেম মোটরসাইকেলে করে D থেকে E-তে এসে গালিবের কাছে পৌঁছাবে। যেহেতু, মোটরসাইকেলের গতি হাঁটার চারগুণ, কাজে এখন আমরা বলতে পারি─
ED=4CE-4p
এবার, গালিবকে নিয়ে কাসেম মামার বাড়িতে পৌঁছাবে যে সময়ে খালেকও হেঁটে হেঁটে মামার বাড়িতে পৌঁছাবে। খালেক F থেকে B-তে এবং কাসেম ও গালিব E থেকে B তে যাবে। হাঁটার গতির চেয়ে মোটর সাইকেলের গতি যেহেতু চারগুণ কাজে আমরা লিখতে পারি
ধরি, FB=y;
তাহলে EB=4y
বা, ED+DF+FB=4y
বা, 4p+p+y=4y
সুতরাং, y=(5/3)p
অন্যদিকে, AD-AC=CE+ED
বা, 4x-x=p+4p
বা, x=(5/3)p
আমরা জানি তিনভাই-এর বাড়ি থেকে মামার বাড়ির দূরত্ব ৩০০ কিমি। কাজে আমরা লিখতে পারি─
(5/3)p+p+4p+p+(5/3)p = 300 km
বা, P=(900/28) = 32.14 km
এখন আমরা বিভিন্ন পয়েন্টের দূরত্ব বের করে ফেলতে পারি। এই দূরত্ব অতিক্রমে তিন ভাইয়ের কতো সময় লাগলো, সেটা আমরা বের করে যে কোন একজনের সময় বের করবো, কারণ তারা সবাই একই সময়ে বের হয়েছে এবং একই সময়ে মামার বাড়িতে পৌঁছেছে।
গালিব A থেকে C বিন্দু পর্যন্ত হেটে এবং বাকী পথ মোটরসাইকেলে করে গেছে।
AC=53.57+32.14=85.71 KM এবং হেঁটে হেঁটে গালিব সময় নিয়েছে = 85.71/15 = 5.71 ঘণ্টা।
বাকী পথ গালিব গিয়েছে মোটর সাইকেলে এবং সময় লেগেছে = (300-85.71)/60=3.57 ঘণ্টা।
কাজে মোট সময় = 5.71+3.57=9.28 ঘণ্টা বা ৯ ঘণ্টা ১৭ মিনিট।
এটি তাদের সবচেয়ে কম সময়ে মামার বাড়ি যাওয়ার উপায়। খালেক বা কাসেমের জন্য হিসাব করলেও একই সময় পাওয়া যাবে।
এটি কিছুদিন আগের ঘটনা। গেছিলাম এক স্কুলে। গিয়ে দেখি দোতলায় এক বিশাল অডিটোরিয়াম। ১০০ টা বাতি আছে ওখানে। কিন্তু বাতির সুইচগুলো সেখানে নাই! মানে কী?
হেড স্যার জানালেন- ঠিকাদার ভুল করে ১০০টা বাতির সুইচ নিচতলায় সিঁড়ির ঘরে লাগিয়ে দিয়েছে।
ভাবলাম ওখানে নিশ্চয়ই নম্বর ট্যাগ লাগানো। কিন্তু নিচে গিয়ে দেখলাম কোন সুইচে কোন নম্বর লাগানো নাই।
– হায় হায়। আপনার কেমন করে কম সংখ্যক নির্দিষ্ট বাতি জ্বালান?
আমরা সব সময় সব জ্বালায় রাখি!!!
তো, অনুষ্ঠান করতে করতে আমি ভাবছিলাম কীভাবে, কতো কম কষ্টে সুইচগুলোকে বাতি অনুসারে লেবেলিং করা যায়?
প্রথম উপায় হচ্ছে। বাতিগুলোকে ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত মার্কিং করা। তারপর নিচে গিয়ে ১টা সুইচ জ্বালানো। ওপরে এসে দেখা কত নম্বর জ্বলে। তখন নিচে গিয়ে সেটাতে ঐ নম্বর দেওয়া। তারপর আর একটা সুইচ অন করে আবার ওপরে যাওয়া। এভাবে ৯৯ বারে সব সুইচকে লেবেলিং করা হবে।
প্রশ্ন হচ্ছে – সবচেয়ে কম কতো বার দৌড়াদৌড়ি করে সব সুইচকে লেবেলিং করা যাবে?
…
…
…
ভাবনাশেষহলেমিলিয়েনিতেপারেন
এই সমস্যাটা বা এই ধরণের সমস্যা সমাধানের সহজ উপায় হচ্ছে একটি চিন্তা করা। কোন প্যাটার্ন খোঁজার চেষ্টা করা। আমাদের স্কুল-কলেজের সিলেবাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নাই। সেটি হলো বিভিন্ন কেস ধরে আগানো। গণিত অলিম্পিয়াডের পোলাপানদের নাম্বার থিউরি করাতে গিয়ে আমরা এটা টের পেয়েছি। আর একটা দূর্বলতা হলো সমাধান যাচাই না করে “উত্তরমালা” দেখা পদ্ধতি। দুটোই আসলে আমাদের ছেলেমেয়েদের গণিতের ভিত্তি দুর্বল করে দেয়। যাচাই করার পদ্ধতি যদি ছোটবেলা থেকে শেখানো হতো তাহলে জার ইকবাল স্যারের নিউরনে অনুরণনের সমাধান বই যেমন লোকে খুঁজতো না তেমনি গণিত অলিম্পিয়াডের প্রশ্নের সমাধানেরও খোঁজ পড়তো না।
যাকগে সেসব কথা। আমরা বরং এই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করি। ধরি আমাদের একটা মাত্র বাতি আর একটা মাত্র সুইচ থাকতো তাহলে আমাদের কোন সমস্যাই থাকতো না।
যদি দুইটা বাতি আর দুইটা সুইচ হতো? তাহলে তাহলেও একবারে আমরা সমাধান পেতাম। নিচে একটা সুইচ অন করে উপরে এসে দেখতাম কোন বাতিটা জ্বলে। যে সুইচটা আমি জ্বালিয়ে এসেছি সেটাই এই বাতির। অন্যটি অন্য বাতির।
এখন আমরা বাতির সংখ্যা বাড়াই। এখন আমরা বাতিগুলোকে A, B, C, D এভাবে নামকরণ করি আর সুইচগুলোকে 1,2,3,4…. এভাবে নাম্বার দেই।
ধরা যাক আমাদের বাতি আছে তিনটা (A, B, C)। তাহলে প্রথমে 1 নং সুইচ অন করে ওপরে যাবো এবং ১ নং সুইচের বাতিকে চিহ্নিত করবো। তাহলে আমাদের বাকী থাকবে দুইটা। আর দুইটা তো আমরা জানি। তার মানে তিনটে বাতির সুইচকে চিহ্নিত করতে আমাদের ২ বার ওঠানামা করতে হবে।
এবার আমরা চারটে বাতি নিয়ে আগাই। এখানেও প্রথম দুইবারে দুইটাকে চিহ্নিত করে তৃতীয়বারে বাকী দুইটাকে চিহ্নিত করে ফেলতে পারবো। তার মানে আমাদের প্যাটার্ন হবে – যতোটা বাতি, তার চেয়ে একটা কম। তাই না?
তাইলে তো আমাদের তেমন একটা উপকার হচ্ছে না। অন্য কিছু কী করা যায়? আমরা জানি ২টার সমাধান করা যায় ১ বারে। তাহলে আমরা যদি ২টার জোড়ে যেতে পারি তাহলে হয়তো ৪টার অন্য সমাধান হতে পারে।
আমরা তাহলে অন্যভাবে আগানোর চেষ্টা করি। ধরা যাক আমাদের বাতিগুলোর সঙ্গে সুইচের সম্পর্ক এরকম
বাতি ->
A
B
C
D
সুইচ ->
1
3
4
2
যা আমরা জানি না।
এখন আমরা কী করতে পারি? আমরা কী কোন প্যাটার্ন খুঁজতে পারি? যেহেতু আমরা চিহ্নিত করার কাজ করবো তাই আমরা একটা কোন চিহ্ন ব্যবহার করবো। এজন্য আমরা 0 আর 1 ব্যবহার করবো। যেমন যে সুইচ অন সেটা 1 এবং যে বাতি জ্বলে সেটা 1। উল্টোটা 0।
প্রথমে আমরা 1 ও 2 সুইচ অন করবো। বাকী দুইটা অফ থাকবে। সেখানে 0 এবং 1 দিয়ে দেই। তাহলে সেটা হবে
সুইচ
1
2
3
4
লেবেল
1
1
0
0
আমরা যেহেতু জানি কানেকশটা কাজে ওপরে গিয়ে আমরা দেখবো A ও D জ্বলে থাকবে। অন্য দুটো নেভা। এখন বাতির নিচে আমরা লেবেলিং করি-
বাতি
A
B
C
D
লেবেল
1
0
0
1
ফিরে আসবো সুইচের কাছে। আমি কিন্তু স্পষ্টতই ৪টি বাতি ও সুইচকে দুইটি জোড়ায় ভাগ করে ফেলেছি। এখন প্রতি জোড়ার জন্যএকই কাজ করবো। যেমন প্রথম দুইটি সুইচের যা অন ছিল তার একটি (অর্ধেক) অন রেখে অন্যটি অফ করে দিবো। এবং একই ভাবে অন্য জোড়ার একটি অফ রেখে অন্যটি অন করে দিবো এবারও দুইটি অন থাকবে। আগের নিয়মে সুইচের লেবেল 0 এবং 1 আগের লেবেলের পাশে নতুন 0 ও 1 যোগ করি। ধরা যাক আমরা 1 নং ও 3 নংকে অন রেখেছি।
সুইচ
1
2
3
4
লেবেল
11
10
01
00
স্পষ্টতই আমাদের A ও B জ্বলে থাকবে। কাজে বাতির লেবেল হবে
বাতি
A
B
C
D
লেবেল
11
01
00
10
ওয়াও। এখন দেখেন বাতি আর সুইচের লেবেলগুলো প্রত্যেকটি ভিন্ন। এখন যে বাতি আর সুইচের লেবেল একই তারাই পরস্পর কানেকটেড। সেটা হলো
বাতি
A
B
C
D
লেবেল
11
01
00
10
সুইচ
1
3
4
2
ওয়াও। দুইবারে কিন্তু আমরা এখন চারটা বাতির চারটা সুইচকে শনাক্ত করে লেবেলিং করে ফেলেছি!
এই কার্যক্রমে আমরা দেখছি আমাদের বুদ্ধি হচ্ছে অর্ধেক করে ফেলা।
এবার ধরা যাক ৮টা বাতি ও ৮টা সুইচ আছে। তাহলে এই পদ্ধতি কেমন করে কাজ করবে?
এবার আমরা ধরি আমাদের আটটা বাতির প্রকৃত কানেকশন হলো এরকম
বাতি ->
A
B
C
D
E
F
G
H
সুইচ ->
1
2
5
6
7
8
3
4
বাতিওসুইচেরপ্রকৃতকানেকশন
এখন আমরা অর্ধেক সুইচ প্রথমে অন করবো
সুইচ
1
2
3
4
5
6
7
8
লেবেল
1
1
1
1
0
0
0
0
এই কাজের পর দোতলায় গিয়ে আমরা দেখবো A, B, G ও H বাতি জ্বলে আছে। তাহলে বাতির লেবেল হবে
বাতি
A
B
C
D
E
F
G
H
লেবেল
1
1
0
0
0
0
1
1
এবার আবার নিচে আসবো।1 থেকে 4 নম্বর সুইচের দুইটাকে অন রেখে বাকী দুইটাকে অফ করে দেবো। আর 5 থেক 8 পর্যন্ত সুইচের দুইটাকে অফ রেখে দুইটা অন করে আবার লেবেলিং করবো।
সুইচ
1
2
3
4
5
6
7
8
লেবেল
11
11
10
10
01
01
00
00
দেখা যাচ্ছে এ যাত্রায় 1,2,5 ও 6 সুইচ অন। তারমানে A, B, C ও D বাতি জ্বলে থাকবে।
বাতি
A
B
C
D
E
F
G
H
লেবেল
11
11
01
01
00
00
10
10
এখন সুইচের দিকে তাকানো যাক। দেখবেন সুইচগুলো ৪টা জোড়াতেই ভাগ হয়ে গেছে। জোড়ার সমাধান তো আমরা জানি। প্রতি জোড়ায় একটাকে অন রেখে অন্যটা অফ করে দিতে হবে। তাহলে সুইচের নতুন লেবেল কী হবে?
সুইচ
1
2
3
4
5
6
7
8
লেবেল
111
110
101
100
011
010
001
000
এখন আমাদের 1,3,5 ও 7 নং সুইচ অন করা। তার মানে A, C, E ও G বাতি জ্বলে আছে।
বাতি
A
B
C
D
E
F
G
H
লেবেল
111
110
011
010
001
000
101
100
বাহ, এখন দেখেন বাতির লেবেল ও সুইচের লেবেল কিন্তু প্রত্যেকটাই ভিন্ন। আপনি এবার বাতির লেবেল আর সুইচের লেবেল মেলালেই পেয়ে যাবেন কোন সুইচের কোন বাতি
বাতি
A
B
C
D
E
F
G
H
লেবেল
111
110
011
010
001
000
101
100
সুইচ
1
2
5
6
7
8
3
4
যা কিনা প্রকৃত কানেকশন!!! অর্থাৎ আমাদের সমাধান সঠিক!!
তার মানে ৮টি বাতিকে আমরা তিনবারেইচিহ্নিত করতে পারছি।
আমার মনে হয় আমরা প্যাটার্ন পেয়ে গেছি। 8 এর দ্বিগুণ 16টি থাকলে আমরা 4 বারেই সেটা করে ফেলতে পারবো। 32টা থাকলে 5 বার, 64টি থাকলে 6 বার। 128টি থাকলে 7 বার।
আমাদের বাতি আছে 100টি যা 64টি থেকে বড় কিন্তু 128 থেকে ছোট। তারমানে ৭ বারেই আমরা আমাদের সব সুইচকে শনাক্ত করে ফেলতে পারবো!!!
তাহলে আমাদের সমাধান হবে –
আমরা প্রথমে 1-50 পর্যন্ত সুইচ অন করবো। 51-100 অফ রাখবো। ওপরে এসে ৫০টি জ্বলা বাতিকে 1 এবং ৫০টি নেভা বাতিকে 0 দিয়ে চিহ্নিত করবো। ২য় ধাপে 1-50 নং সুইচের অর্ধেক অন রেখে বাকী অর্ধেক অফ করে দিবো। আর 51-100 এর অর্ধেককে অফ রেখে বাকী অর্ধেককে জ্বালিয়ে দেবো। এভাবে প্রতি বারে আমাদের ৫০টা বাতি জ্বলে থাকবে আর ৫০টি বাতি নিভে থাকবে এবং ৭ বারেই আমরা সবক’টাকে লেবেল করে ফেলতে পারবো!!!
আমার ধারণা যারা একটু উচ্চতর গণিতের ধারণা রাখেন তাদের জন্য সমাধান হবে Log2 (n)। কাজে যে কোন সংখ্যক বাতির জন্য আপনি বের করতে পারবেন। আর যারা প্যাটার্নটা আসলে শেষ পর্যন্ত কিসের সঙ্গে মিললো, সেটাও অনেকেই নিশ্চয়ই বুঝে ফেলেছেন।
সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক। (এই ধরণের আরো আর্টিকেল পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।)